শুক্রবার, ১৮ অক্টোবর ২০২৪, ০৮:৩১ অপরাহ্ন

আপডেট
ঠাকুরগাঁওয়ে তীব্র দাবদাহের প্রভাবে লিচুর সঙ্গে মনও পুড়ছে চাষির

ঠাকুরগাঁওয়ে তীব্র দাবদাহের প্রভাবে লিচুর সঙ্গে মনও পুড়ছে চাষির

মো:সোহেল আলী, ঠাকুরগাঁও:  ঠাকুরগাঁওয়ে গত বছর কয়েক দফার শিলাবৃষ্টিতে ঝরে গিয়েছিলো গাছের লিচু। এ বছরে মুকুলের ভারে নুয়ে পড়েছিল গাছ ডাল। তা দেখে লাভের আশায়, স্বপ্ন বুনিয়ে ছিলেন লিচু চাষিরা। কিন্তু তীব্র দাবদাহের প্রভাবে মুকুল থেকে গুটি হতেই তার কিছু ঝরে গেছে। এরপরও গাছে যা লিচু টিকে ছিল, সেটাতেও আবার পোড়া দাগ দেখা দিয়েছে। আর এতেই ফেটে নষ্ট হয়ে গেছে গাছের অনেক লিচু। ফলে লিচুর পোড়া দাগের সঙ্গে যেন চাষিদের মনও পুড়ছে। লোকসানের আশঙ্কা করছেন লিচু চাষিরা।
ঠাকুরগাঁওয়ে প্রতিবছরই একের পর এক লিচুবাগান গড়ে উঠছে। ঠাকুরগাঁওয়ের জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর কার্যালয় তথ্য অনুসারে, জেলায় ৭০৫ হেক্টর জমিতে ২৫৬টি লিচুর বাগান আছে। আর এসব বাগান থেকে গত বছর ৫ হাজার ৫৯৮ মেট্রিক টন লিচু উৎপাদন হয়েছিল। এ ছাড়া এলাকার অনেক বাড়ির আঙিনায় ও আশপাশের ভিটায় লিচুর চাষ করা হয়। ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার চিলারং ইউনিয়নের

কয়েকটি গ্রামে গোলাপি, মাদ্রাজি, বোম্বাই, বেদানা ও চায়না-৩ জাতের লিচুর চাষ হয়। এখন সেসব গ্রামে গাছে থোকা থোকা লিচু ঝুলে আছে। কোনো গাছে কেবল পাক ধরেছে। আবার কোনোটির রং এখন সবুজ। কোনো কোনো গাছের লিচুর গায়ে রোদে পোড়া দাগ। আবার কিছু লিচুর চামড়া ফেটে গেছে।  লিচুচাষিরা বলছেন, যখন গুটি থেকে আঁটিতে পরিণত হচ্ছিল, তখন লিচু ফেটে গিয়ে ভেতরের শাঁস বেরিয়ে আসে। একপর্যায়ে চামড়া শুকিয়ে নিচে পড়ে। অনেক গাছের ৪০ শতাংশ লিচু এভাবে নষ্ট হয়ে গেছে।লিচু চাষিদের ধারণা, তীব্র গরমে এমনটি হয়ে থাকতে পারে। চিলারং ইউনিয়নের মহাদেবপুর গ্রামের জয়নন্দ রায় এর লিচুর একটি বাগান রয়েছে। সেই বাগানে গোলাপি সহ ১০৮ টি গাছ আছে। আজ শুক্রবার বেলা ১১টার দিকে দেখা গেল, তিনি গাছের লিচু পরিচর্যায় ব্যস্ত। জয়নন্দ রায় বললেন, গত বছর শিলাবৃষ্টিতে গাছের লিচু ঝরে গিয়েছিল। এ বছর গাছ মুকুলে ভরে যায়। কিন্তু বৃষ্টি না থাকায় মুকুল থেকে গুটি হতেই কিছু ঝরে গেছে। মাসখানেক আগে একবার বৃষ্টি হওয়ায় গাছে থাকা লিচু দ্রুত বাড়তে থাকে। কিন্তু পরে প্রচণ্ড গরমে লিচুতে দাগ দেখা দেয়। আর এতেই গাছের অর্ধেকের বেশি লিচু ফেটে গেছে। আবার সেসব লিচু এখন মাটিতে ঝরে পড়ছে।

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর ঠাকুরগাঁও কার্যালয়ের উপপরিচালক সিরাজুল ইসলাম বলেন, মৌসুমের শুরু থেকে দিনে প্রচণ্ড দাবদাহ ও রাতে ঠান্ডা আবহাওয়া ছিল। এতে লিচু ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। অন্যদিকে স্বাভাবিক বৃষ্টি না হওয়ায় মুকুল থেকে গুটি বের হওয়ার সময় কিছু ঝরে গেছে। এর পর থেকে চলেছে টানা দাবদাহ। ফলে পাকার আগেই গাছের কিছু কিছু লিচু ফেটে নষ্ট হয়ে যায়। এরপরও গাছে যে পরিমাণ লিচু টিকে রয়েছে, তাতে চাষির খুব একটা ক্ষতি হবে না।

শেয়ার করুন

Comments are closed.




দৈনিক প্রতিদিনের কাগজ © All rights reserved © 2024 Protidiner Kagoj |